DARUSSUNNAH ISLAMIA ALIM MADRASAH
KULAURA,MOULAVIBAZAR. EIIN : 129661
সাম্প্রতিক খবর

মাদরাসার ইতিহাস

প্রতিষ্ঠা সন-১৯৪৬ইং, নাম ঃ- রবিরবাজারের পূর্ব পার্শের ইসলামিয়া মাদ্রাসা (এমি)। প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক মৌলভী আরজুমন্দ আলী, তিনি বর্তমান ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মৌরাপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। পদবী ছিল- হেড মুদাররিছ।

উক্ত মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা ছিলেন পৃথিমপাশা নওয়াব বাড়ীর এক সুনামধন্য ব্যক্তি জনাব মৌলভী নওয়াব আলী আত্তর খান। কালের আবর্তনে মাদ্রাসাটি কিছুদিন বন্ধ থাকে, পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালে রবিরবাজার হাফিজিয়া মাদ্রাসার নামকরণ করে শুরু হয় হিফজ শাখা, মাদ্রাসাটির হাল ধরেন নওয়াব আলী ছফদর খান রাজা সাহেব এবং শিক্ষক হিসাবে ছিলেন পুরসাই নিবাসী জনাব হাফিজ আনছার উদ্দিন ও কানিকিয়ারী নিবাসী ক্বারী আব্দুল মান্নান চৌধুরী সাহেব এবং পরিচালনার দায়িত্ব নেন ঃ-

১। জনাব, নওয়াব আলী হায়দর খান, পৃথিমপাশা (নওয়াব বাড়ী)

২। জনাব, মৌলভী নওয়াব আলী আত্তর খান, পৃথিমপাশা (নওয়াব বাড়ী)

৩। জনাব, হাজী তজম্মল আলী চৌধুরী, গনিপুর

৪। জনাব, হাজী সদর উদ্দিন, পৃথিমপাশা  

৫। জনাব, মোঃ আব্দুর রশিদ, সুলতানপুর

তৎকালীন মাদ্রাসাটি ছিল আধাপাকা একটি ঘর। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত হাফিজ আনছার উদ্দিন শিক্ষকতা করেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় মাদ্রাসাটি পূনরায় বন্ধ হয়ে যায়। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় হাফিজ আনছার উদ্দিন সাহেব চাকুরীতে যোগদান করলে মাদ্রাসাটি চালু হয়ে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন এবং পরবর্তী বিদেশ চলে যান। তখন মাদ্রাসাটির হাল ধরেন মনসুরপুর নিবাসী হাফিজ আব্দুন নূর সাহেব এবং সুলতানপুর নিবাসী মৌলভী আব্দুল হালিম, তিনি হাফিজির পাশাপাশি তাজবীদ শিক্ষাসহ মাছ’লা-মাছায়েল শিক্ষা দিতেন। মৌলভী আব্দুল হালিম সাহেবের ইন্তেকালের পর গনিপুরের হাফিজ আব্দুশ শুকুর সাহেবও কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। উল্লেখ্য যে, নওয়াব আলী ছফদর খান (রাজা সাহেব) এর ইন্তেকালের পর মাদ্রাসার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন নওয়াব আলী ছরওয়ার খান (চুন্নু নওয়াব) এবং সেক্রেটারী ছিলেন ১২নং পৃথিমপাশা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ মাস্টার।

উক্ত ব্যক্তিদ্বয় ইন্তেকালের পর সভাপতি হলেন তৎকালীন জাতীয় সংসদ সদস্য নওয়াব আলী আব্বাছ খান ও সেক্রেটারী আলী আমজদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন মিঞা।

মাদ্রাসাটি ১৯৯০ সালে জনাব হাফিজ আব্দুন নূর সাহেবের একান্ত প্রচেষ্টায় দাখিল মাদ্রাসায় রূপান্তরিত করা হয় এবং নাম দেয়া হয় দারুচ্ছুন্নাহ্ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা রবিরবাজার।

প্রথম সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন মাও: আব্দুশ শুকুর ফুলতলী। কিছু দিন চাকুরী করার পর তিনিও চলে যান এবং নিয়োগ লাভ করেন বর্তমান অধ্যক্ষ মাও: আব্দুল জব্বার। মাদ্রাসাটি ১৯৯৩ সালে প্রথম দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে শতভাগ ফলাফল অর্জন করে এবং ১৯৯৫ সালে এম.পি.ও ভুক্ত হয়। একাধিকবার মাদ্রাসাটি দাখিল পরীক্ষায় শতভাগ ফলাফল অর্জন করে উপজেলায় শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব অর্জন করে। ২০০২ সালে মাদ্রাসার সুপার মাও: আব্দুল জব্বার উপজেলার শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা প্রধান নির্বাচিত হন। ২০০৫ সাল হতে মাদ্রাসাটি আলিম পর্যায়ে উন্নিত হয়। ২০১২ সালে মাদ্রাসাটি আলিম একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে।

বর্তমান অবস্থান ঃ ২০১৩ সালে মাদ্রাসাটি জেডিসি ও ২০১৫ দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্র অনুমোদন লাভ করে। মাদ্রাসাটি ইংরেজি ট অক্ষরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। মাদ্রাসাটি দক্ষিণ পাশে দুতলা পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন, পূর্ব ও উত্তর পাশে সরকার কতৃক দুটি দালান পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট রয়েছে। উত্তর পাশে পুরাতন হাফিজিয়া মাদরাসা এখনও প্রাচীন কালের সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। রয়েছে মাদ্রাসার বিশাল খেলার মাঠ যেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা খেলা-ধুলা ও সকালে এসেম্বলি করে থাকে। প্রতি বৎসর বার্ষিক জলসার বিশাল মঞ্চ এ মাঠেই হয়ে থাকে। মাঠের ঠিক পশ্চিম পাশে রয়েছে মনোরম কারুকার্য খচিত একটি বিশাল দু’তলা মসজিদ যার নির্মাণ কাজের ব্যয়ভার বহন করেন আরব আমিরাতের নাগরিক খলিফা ওবায়েদ আলী। শিক্ষক-শিক্ষিকা, পরিচালনা কমিটি, শিক্ষার্থী এবং এলাকার সচেতন জনতার একান্ত ইচ্ছা মাদ্রাসাটি যেন কামিল স্তর পর্যন্ত উন্নতি হয় এবং ক্বালা ক্বালা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ধ্বনিতে এলাকার আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে উঠে।

২০১৬ ই; হতে অত্র মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগের পাশাপাশি এতিমখানা চালু করা হয়েছে, এব; নাম করণ করা হয়েছে " মৌলভী আলী আত্তর খান হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা ''।এলাকার জনগনের সাহায্য সহযোগিতায় এবং জেলা পরিষদের অথা'য়নে একটি নতুন ভবন নিমা'ন করা হয়েছে। দিনরাত এখানে কোরআনের সূর প্রতিধ্বনিত হচ্ছে, মাদ্রাসা পরিচালনা কমটির সভাপতি নবাব আলী নকী খান, সদস্যবৃন্দ ও শিক্ষক / শিক্ষিকাদের আপ্রান প্রচেষ্টায় মাদ্রাসাটি এপযা'য়ে উপনিত হয়েছে। বৃত্তবানদের মাদ্রাসাটির প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার জন্য অনুরুধ করা যাচ্ছে,, এবং আগ্রহী শিক্ষাথী'দের মাদ্রাসায় ভ'তি হওয়ার আহবান করা যাচ্ছে।